ফুলকপির ১৩ স্বাস্থ্য উপকারিতা | 13 Health Benefits Of Cauliflower

  শীতকালে ফুলকপি কেন খাবেন ?

ফুলকপির স্বাস্থ্য উপকারিতা Health Benefits Of Cauliflower
ফুলকপির স্বাস্থ্য উপকারিতা Health Benefits Of Cauliflower

 All The Health Benefits Of Cauliflower Bangla.

শীতকাল শুরু হওয়ার সাথে সাথে বাজারে পাওয়া যায় বাহারি রকমের সবজি ।এই সবজী যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর তেমনি খেতেও সুস্বাদু । শীতকালের সবজি গুলির মধ্যে ফুলকপি একটি অন্যতম সবজি ।

শাক সবজি চাষ সম্পর্কে জানতে

পাতা দিয়ে ঘিরে থাকা  আংশিক বিকশিত  অংশটুকু দেখতে ফুলের মতো বলেই এমন নামকরণ করা হয়েছে ।ফুলকপির রান্না করে , আচার ,বা কাঁচা   খাওয়া হয় ।

  •  ফুলকপির বৈজ্ঞানিক নাম - ব্রাসিকা অলেরাসিয়া

ফুলকপির পুষ্টি উপাদান (Cauliflower Nutrition facts)

চলুন জেনে নেয়া যাক ফুলকপির পুষ্টিগুণ--

 ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি ,সি, কে ,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক ,আয়রন ।পুষ্টিবিদদের মতে একটি মাঝারি আকারে ফুলকপিতে রয়েছে --

খাদ্যশক্তি - ২৫ কিলোক্যালরি                             

কার্বোহাইড্রেট-৪৯৭ গ্রাম 

প্রোটিন -১.৯২ গ্রাম 

আশঁ- ২ গ্রাম

প্যানথানিক এসিড- ০.৬৬৭ মাইক্রো গ্রাম 

ফোলেট-০.৫৭ মাইক্রো গ্রাম

নিয়াসিন-০.৫০ মাইক্রো গ্রাম

থায়ামিন-০.০৫মাইক্রো গ্রাম

ভিটামিন সি-৯১ মিলি গ্রাম

ভিটামিন ই-০.০৮ মিলি গ্রাম

ভিটামিন কে-১৫.৫ মাইক্রো গ্রাম

ভিটামিন বি -১০.০২ মিলি গ্রাম

 ফুলকপির কচি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ,আয়রন ও খাদ্যশক্তি রয়েছে ।


পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ফুলকপিতে রয়েছে নানা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাঃ 

শরীরেরবৃদ্ধিতেঃ

গর্ভবতী মা ,বাড়ন্ত শিশু ,কিশোর- কিশোরীদের জন্য ফুলকপি খুব উপকারী ।এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন যা শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং শরীরের রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে ।Benefits Of Cauliflower During Pregnancy.

ওজন কমাতেঃ

ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান , খাদ্যআঁশ, অল্প পরিমাণ চর্বি তাই ফুলকপি ওজন কমাতে সাহায্য করে ।Cauliflower Benefits Weight Loss.

খাদ্য হজমে ও কোষ্ঠকাঠিন্যঃ

ফুলকপিতে রয়েছে ফাইবার যা খাদ্য হজম করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ।হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ।ফুলকপিতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট ,সালফার ও ফাইবার ।

মস্তিষ্কের উন্নতি সাধনঃ

ফুলকপি মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করে ।তাই গর্ভাবস্থায় ফুলকপি খেলে নবজাতক শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করতে কাজ করে। ভ্রূণের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে ,স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও দ্রুত শিখতে সাহায্য করে ।

শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে ও রোগ প্রতিরোধেঃ

শরীর সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন ।ফুলকপি দেহের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে আমাদেরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে এবং শক্তি যোগায় ।শীতে সর্দি-কাশি জ্বর লেগেই থাকে এসব রোগ প্রতিরোধ করে আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে ।

হৃদপিণ্ড ভালো রাখতেঃ

ফুলকপিতে রয়েছে সালফোরাফেন যা রক্তচাপ কমায় এবং কিডনি সুস্থ রাখে ,শরীরে রক্ত উৎপাদন করে ।

ক্যানসার প্রতিরোধেঃ

ফুলকপির সালফোরাফেন উপাদান ক্যান্সার সেল ধ্বংস করে এবং টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে ক্যান্সার থেকে আমাদের  ঝুঁকিমুক্ত রাখে ।

বন্ধ্যাত্ব দূর করেঃ

ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন ই যা বন্ধ্যাত্ব দূর করতে এবং সন্তান ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় ।তাই যারা গর্ভবতী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা সন্তান হচ্ছে না তাদের খাদ্য তালিকা ফুলকপি রাখা জরুরি ।

টক্সিন দূর করেঃ

শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে ফুলকপি ।Benefits Of Cauliflower Juice.

চোখের যত্নেঃ

 ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ।

ক্ষতসারাতেঃ

কোথাও  কেটে গেলে বা পুড়ে গেলে ফুলকপির কচি পাতার রস লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায় ।ক্ষত তাড়াতাড়ি সেরে যায় ।

 চুলকানি প্রতিরোধেরঃ

শীতকালে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক রুক্ষ ফলে বিভিন্ন রকমের চুলকানি দেখা দিতে পারে ।চুলকানির জায়গায় ফুলকপির কচি পাতার রস লাগালে চুলকানি কমে যায় এবং আরাম পাওয়া যায় ।

চুল ও ত্বকের যত্নেঃ

নিয়মিত ফুলকপি খেলে চুল ঝলমলে উজ্জ্বল হয় ,চুল পড়া কমে ,ত্বকের বলিরেখা দূর করে এন্টি এজিং এর কাজ করে বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করে ।Cauliflower Benefits For Skin.

ফুলকপির অপকারিতা এবং সতর্কতাঃ 

  • থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হলে ফুলকপি না খাওয়াই ভালো । থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে আসলে আবার খাওয়া শুরু করতে পারেন ।
  • কিডনির সমস্যা থাকলে ফুলকপির না খাওয়াই ভালো ।ফুলকপি খেলে কিডনির সমস্যা বাড়বে ।
  • সবজি চাষে প্রচুর কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তাই ফুলকপি খাওয়ার আগে ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন ।Why Cauliflower Is Bad For You?
  •  ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার তাই ফুলকপি বেশি পরিমাণে খেলে পেট ফাঁপা এবং গ্যাস তৈরি হতে পারে ।
কোন খাবারই বেশি গ্রহণ করা উচিত নয় ।যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই গ্রহণ করুন ।খাদ্যতালিকায় সব ধরনের খাবার রাখতে হবে । তাতে আপনার শরীরের সকল চাহিদা পূরণ হবে ।

                                    শীতে সুস্থ থাকুন ,ভালো থাকুন ।

                                                আল্লাহ হাফেজ 



Post a Comment (0)
Previous Post Next Post