৮ টি উপায়ে শীতে ঘর গরম রাখুন (How To Keep Your House Warm In Winter)

শীতকালে ঘর উষ্ণ রাখার উপায়

৮ টি উপায়ে শীতে ঘর গরম রাখুন


শীতে ঘর গরম রাখার সহজ উপায়। এবং কিছু সর্তকতা মেনে চলুন ,সুস্থ থাকুন। 

একদম জাঁকিয়ে বসেছে শীত। সারাদিন হিমেল হাওয়া বইছে। কোন কোন দিন আবার সূর্যের দেখা মিলছে না। নিজেকে গরম রাখার কত আয়োজন, কেউ চার দোকানে ভিড় জমাচ্ছে ,কেউ  আগুন ধরে শরীর গরম করছে ,কারও শীতের বাহারি পোশাক  পড়ে শীত তাড়ানোর চেষ্টা।

সারাদিনের কাজ শেষে একটু বিশ্রাম আর উষ্ণতার জন্য আমরা নিজের বাসায় ফিরে আসি। তীব্র শীতে ঘরটা হিমশীতল হয়ে থাকে। তাই ঘরকে শীতের শীতলতা থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারি। স্বল্প খরচে বা ঘরোয়া পদ্ধতিতে আমরা এই কনকনে শীতে ঘর গরম রাখতে পারব। How to make your room warmer in winter Bangla tips.

 চলুন জেনে নেয়া যাক কিছু কার্যকরী কৌশল ---

১.রোদের তাপ ধরে রাখুনঃ

শীতে প্রতিদিন রোদের দেখা পাওয়া ভার। রোদ উঠলে দরজা জানালার পর্দা সরিয়ে দিন। রোদ পুরো ঘরকে গরম করে তুলবে। শীতের পড়ার লেপ কম্বল বালিশ রোদে দিতে পারেন এতে ঘর গরম হবে আবার বিছানাও গরম থাকবে।Cheapest way to stay warm in winter.

২.ফাঁকা স্থান গুলো বন্ধ করুনঃ 

ঘরের দেয়াল খুব তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়ে যায় ।তাই ঘরের দেয়ালে পোস্টার ,ছবি ,সুন্দর হাতের কাজের ওয়ালমেট ঝুলিয়ে দিতে পারেন। দেয়ালে তাপ ধরে রাখতে সুন্দর কাজ করা কার্পেট ঝুলিয়ে দিতে পারেন। ফাঁকা দেয়াল তাপ ধরে রাখতে পারেন। আসবাবপত্র (বুকশেলফ ,আলমারি) দেয়াল ঠান্ডা সরাসরি আপনার কাছে পৌঁছাতে বাধা দিবে। 

দরজা-জানলা বা ফাঁকা স্থান গুলো দিয়ে ঠান্ডা হওয়া প্রবেশ করে। রোদ সরে গেলে দরজা জানালা বন্ধ করে দিন। ফাঁকা স্থান রবার ব্যান্ড ,মোটা কাগজ বা কাপড়, সিলিকন ফুয়েল দিয়ে আটকে দিন  ঘর অনেকটা গরম থাকবে। How to keep your house warm in winter without a heater.

৩.উজ্জ্বল রঙের ব্যবহারঃ

দরজা জানালায় পর্দা আমরা সবাই ব্যবহার করি। একটু গাঢ় রঙের মোটা পর্দা ব্যবহার করে ঘরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারি। এতে ঘর অনেক সময় ধরে গরম থাকবে। দিনের রোদ আসলে পর্দা সরিয়ে রোদ ঘরে আসতে দিন চলে গেলে পর্দা টেনে দিন। 

ঘরের বেড কাভার উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করুন।দেয়াল উজ্জ্বল রং করে নিতে পারেন। কিছু রং তাপ ধরে রাখে। লাল ,কমলা, হলুদ ,সোনালী রং তাপ ধরে রাখে।How to keep house warm in winter in Bangladesh,India.

৪.মাদুর বা কার্পেটঃ

ঘরের মেঝে শীতকালে যেন আমাদের শত্রু হয়ে যায়। মেঝেতে খালি পায়ে পা ফেলাই দায়। মেঝে থেকে ঠান্ডা উঠতে থাকে ,সেটা টাইলস বা মার্বেল নির্মিত হলে তো কথাই নেই। তাই ভালো মেঝে টিকে ঢেকে দিন শতরঞ্জি বা কার্পেটে। 

বাজারে অনেক সুন্দর হালফ্যাশনের কারুকাজ করা কার্পেট পাওয়া যায়।পাটের বা প্লাস্টিকের চাটাই পাওয়া যায় খুব অল্প দামে।how to keep house warm without electricity.

৫.রান্নাবান্নাঃ

সকালে এবং সন্ধ্যায় বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজ করুন। এতে ঘরের তাপমাত্রা বাড়বে। রান্না ঘরের দেয়ালে ফুয়েল পেপার লাগিয়ে নিলে অনেকক্ষণ সময় দেয়াল গরম থাকবে। যারা লাকড়ির চুলায় রান্না করেন রান্না শেষে গরম কাঠ-কয়লা মাটির হাড়িতে করে ঘরের ফাঁকা জায়গায় ঢাকনা দিয়ে রাখতে পারেন এটি প্রাকৃতিক রুম হিটারের কাজ করবে।How to keep a poorly insulated house warm.

৬.কম্বলের ব্যবহারঃ

অতিরিক্ত ঠান্ডায় বিছানার চাদরের উপর বসাই দায়, তার উপর রাতের ঘুম।এপাশ ঘুরলে ওপাশ ঠান্ডা হয়ে যায় , ওপাশ আর ফিরতে ইচ্ছে করে না। এর ভালো সমাধান হচ্ছে কম্বল। বাজারে পাতলা কম্বল পাওয়া যায়। বিছানার উপর একটা পাতলা কম্বল বিছিয়ে দিন দেখুন জাদু। আরামে ঘুমান রাত ভর। আমরা শীতে লেপ ব্যবহার করি লেপের নীচে একটা পাতলা কম্বল দিয়ে দিতে পারেন খুব সহজেই শরীর গরম থাকবে।

৭.রুম হিটারঃ

উপরের কোনটা যদি কাজ না করে কিংবা আপনি ব্যস্থতার জন্য করতে না পারেন তবে সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে রুম হিটার। বাজারে অনেক সুন্দর রুম হিটার কিনতে পাওয়া যায় আপনার পছন্দ ও সামর্থ্য অনুযায়ী সহজে কিনে নিতে পারেন। ঘরের তাপমাত্রা সঙ্গে মিলিয়ে তাপমাত্রা সেট করে  নিন।

৮.নিজেকে উষ্ণ রাখুনঃ

  • শীতের হাত থেকে বাঁচতে লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে না থেকে হাত-পা ঝাড়া দিয়ে নড়াচড়া করুন এতে শরীর  অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উজ্জীবিত থাকবে। শীতও  কম লাগবে।
  • প্রতিদিন হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করার চেষ্টা করুন।
  • পুষ্টিকর খাবার খান। মসলাদার চা খেতে পারেন। গোলমরিচ, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি ,আদা খান এগুলো শরীরকে গরম রাখবে।

  • শীতে গরম গরম স্যুপ খেতে পারেন।এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা  ধরে রাখবে এবং পানির ঘাটতি পূরণ করবে ,শীতে পুষ্টিও যোগাবে।
  • বেশি করে শাকসবজি ও ফল খান। শীতে ভিটামিন সি যুক্ত ফল আপনাকে সর্দি ,কাশি ,ঠান্ডা জ্বর থেকে রক্ষা করবে।
  • প্রচুর পানি পান করুন। ফলের রস খেতে পারেন। পানি আপনার শরীরকে হাইড্রেট রাখবে এবং বডি টেম্পারেচার ধরে রাখবে।

  • তিনটি পোশাক পরিধান করুন প্রথমে গেঞ্জি তারপর সুতির জামা সর্বশেষে সোয়েটার বা জ্যাকেট। গেন্জি শরীরের ৩৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা নিশ্চিত করবে , সুতি জামা গেঞ্জি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখবে সোয়েটার বা জ্যাকেট  শীতল হাওয়া ঢুকতে বাধা সৃষ্টি করবে। এতে শরীর তার তাপমাত্রা ধরে রাখবে।
  • শরীরের ত্বক সুস্থ রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন  ত্বক ও চুলের বিশেষ যত্ন নিন।

সতর্কতাঃ

  • শীতের প্রস্তুতি তো অনেক নিলেন। শীতে আমরা একটু গরম অনুভব পেতে অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করি তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।
  • রোদ সরে গেলে পর্দা টেনে জ্বালানা দরজা বন্ধ করে দিন।
  • সারাদিন দরজা-জানালা বন্ধ করে বিকট পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না।শীত তো থাকবেই।একটু বেলা হলে কিছুক্ষণের জন্য দরজা জানালা খোলা রেখে বিশুদ্ধ হাওয়া ঘরে প্রবেশ করার জন্য সুযোগ দিন।
  • রুম হিটার তাপমাত্রা ঘরের তাপমাত্রার সাথে মিল রেখে নির্ধারণ করুন। অধিক সময় ধরে রুম হিটার ব্যবহার না করাই ভালো।এটি ত্বককে শুষ্ক করে তোলে শরীরের ক্ষতি সাধন করে বিদ্যুৎ বিল  ও অধিক হবে।
  • বাচ্চাদের অতিরিক্ত শীতের কাপড় পরিয়ে দেবেন না। ওরা এমনিতেই চঞ্চল সারাক্ষণ এটা ওটা করে ব্যস্ত থাকে তাই ওদের শরীর তাড়াতাড়ি গরম হয়। তাই বাতাস যাতে সরাসরি শরীরে প্রবেশ না করতে পারে তার জন্য ওদের ফুলহাতা কাপড় আর পা ঢাকার জন্য ট্রাউজার পরিয়ে দিন। সাথে মোজা জুতা পরিয়ে দিতে পারেন।

সারাক্ষণ তো আর সোয়েটার পড়ে বা লেপ কম্বল মুড়ি দিয়ে বিছানায় বসে থাকলে চলবে না। তাই পুরো বাসা টাকে গরম রাখার প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলো গ্রহন করে সারা বাসায় আমরা গরম রাখতে পারি। এতে আপনার মানিব্যাগের উপর চাপও পড়বে কম শরীরও সুস্থ থাকবে এবং সারা দিন থাকবেন কর্মক্ষম ।

কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। অতিদ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। সবাই ভালো থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন।

আল্লাহাফেজ।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post