গর্ভধারনের পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণঃ
আমাদের সমাজে এখনো এই আধুনিক যুগে এসেও এটাই অজানা যে,গর্ভধারণের জন্যওপূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। ছেলে মেয়েরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর প্রথম যে কথাটি আসে তাহলো বিয়ে ।বিয়ে মানেই নতুন জীবন নতুন পরিবেশ।- বিয়ের পর নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় বাচ্চা নেওয়ার পালা।( Preparation for checklist Pregnancy)
বিয়ের পরের স্টেপ যেহেতু প্রেগনেন্সি চলুন জেনে নেই আমাদের মানসিক ও শারিরীক ভাবে কিভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ।
আপনার গর্ভবতী হওয়ার পূর্ব প্রস্তুতিঃ
(How to Prepare your body for Pregnancy)আমাদের সমাজে বেশিরভাগ মহিলা জানে যে ,তাদের গর্ভবতী হওয়ার পর একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং জীবনযাত্রাতে পরিবর্তন আনা উচিত ।কিন্তু এই কথাটা খুব কম লোকেই জানে গর্ভবতী হওয়ার পূর্বেই পরিবর্তনগুলি শুরু করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পদক্ষেপ গুলি আপনাকে এবং আপনার শরিীরকে গর্ভাবস্তার জন্য প্রস্তুত করবে এবং একটি সুস্থ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক গুনে বারিয়ে দিবে ।এবার দেখাযাক কি ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার ।
মানসিক প্রস্তুতিঃ
গর্ভধারনের প্রথম ধাপেই আসে মানসিক প্রস্তুতি। স্বামি এবং স্ত্রী দুজনকেই মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে ।এতেই দেকবেন ৫০% প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে ।সন্তান জন্মদানে স্ত্রীর পাশাপাশি স্বামিও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।স্ত্রীকে মানসিক ভাবে সাহস দেওয়া ,সবসময় প্রানবন্ত রাখা স্বামীর দায়িত্ব ।সন্তানের মুখে বাবা ডাক শুনতে চান আর এটুকু করতে পারবেন না তা কি হয় ।
গর্ভধারনের পরিকল্পনা করার পরেই মানসিক ভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে ,নিজের ভিতর আর একটি জীবন কে ধারন করার জন্য । আশপাশের মানুষ ও পরিবেশটাও প্রস্তুত করে নিন সেভাবেই।
ডাক্তারের পরামর্শঃ
মানসিক প্রস্তুতি শেষ হতেই আসে ডাক্তারের পরামর্শের ব্যাপারটা। মানসিক ভাবে নিজেকে প্রস্তুত করার পরই ঘুরে আসুন জানা শুনা ভালো গাইনি ডাক্তারের কাছে পরামর্শের জন্য। অনেকেই মনে করে গর্ভধারণ করবে স্ত্রী স্বামী ডাক্তারের কাছে গিয়ে কি করবে ।আসলে গর্ভধারণের ব্যাপারটা তো আর স্ত্রীর একলার না। স্বামী স্ত্রী দুজনেরই চেকাপ দরকার।
আপনার ডাক্তারের কাছে আপনার বর্তমান স্বাস্থ্য, আপনার স্বাস্থ্যের ইতিহাস এবং আপনার পরিবারের স্বাস্থ্যের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করুন। আপনার পরিবারের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা আপনার বাচ্চার মধ্যে হতে পারে। এর জন্যা আপনার ডাক্তার আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবে।
সঠিক খ্যাদ্যাভাসঃ
সুস্থ্য থাকার জন্য সঠিক খ্যাদ্যাভাস খুবই জরুরী।যেকোন মানুষকেই সুষম খাবার গ্রহন করারঅভ্যাস করা উচিত ।সুষম খাবার গ্রহনের উপরেই জন্মগত ত্রুটিমুক্ত,সুস্থ্য,স্বাভাবিক শিশু জন্ম দেওয়া নির্ভর করে ।ডাক্তারের পরামর্ষ মত একটি ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে পারেন ।(Preparation Pregnancy treatment steps)
শাকসব্জী ,ফলমূল এবং প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন ।সিজনাল দেশীয় সবজি এবং ফল খাওয়া টাই সবচেয়ে উত্তম । আমাদের দেশে বারমাসই কোন না কোন ফল পাওয়াই যায় । দামি ফেল খেতে হবে এমন তো কোন কথা নেই ।
আপনি ”গর্ভকালীন সময়ে মা ও শিশুর যত্ন।” লেখাটি পড়তে পারেন ।
বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে জাঙ্কফুড খওয়াটা এখন একদম স্বাভাবিক একটা ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে ।গর্ভধারনের পরিকল্পনা করার সাথে জাঙ্কফুডের কথা ভুলে যান ।এটি আপনার অনাগত সন্তানের মানসিক ও শারীরিক স্থ্যাস্থের ক্ষতি করবে ।বাইরের খাবারের চাইতে বারিতে বানানো খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে ।
হালকা ব্যায়ামঃ
হালকা ব্যায়ামশরীরের ম্যাটাবলিজম ঠিক রাখতে সাহায্য করে তাই হালকা ব্যায়াম ,হাটাহাটি চালিয়ে যেতে হবে ।ভারী কাজ এরিয়ে চলুন ।বাড়ির স্বাভাবিক হালকা কাজ গুলো চালিয়ে যান এতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ্য থাকবেন ।
এই হালকা ব্যায়াম আপনার গর্ভকালীন সময়ে সুস্থ্য থাকতে সাহায্য করবে ।গর্ভকালীন অনেক জটিলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে ।
ধুমপান ,অ্যালকোহল গ্রহণ বা জর্দ্দা দিয়ে পানঃ
ধুমপান ,অ্যালকোহল গ্রহণ বা জর্দ্দাদিয়ে পান খওয়ার অভ্যাস থাকলে এখনই বাদ দেন ।বাড়িতে কেউ ধুমপান করলে তাকে এড়িয়ে চলুন । ধুমপান আপনার ঘর্ভধারণ ক্ষমতা নষ্টকরে দিতে পারে ।
আপনি যখন গর্ভবতী হওয়ার চেষ্ঠা করছেন তখন আপনার অতিরিক্ত ক্যাফেন গ্রহনের অ্যাভ্যাস থাকলে বাদ দিন নয়ত কম মাত্রায় গ্রহণ করুন ।ক্যাফেন আপনার আপনার অনাগত সন্তানের মানসিক ও শারিরীক স্ব্যাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে ।
স্বাস্থ্যা ও পুষ্টিঃ
আপনার ওজন যদি কম বা বেশি হয় তবে গর্ভবতী হওয়ার পূর্বে আপনাকে আদর্শ ওজনে পৌছানোর চেষ্টা করতে হবে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজন আপনার স্বাস্থ্যা সম্যস্যা গুলে বাড়ার সম্ভ্যাবনাকে আর বাড়িয়ে দেয়। অতিরিক্ত ওজন হওয়ায় উচ্চ রক্তচাপ ,ডায়াবেটিস ,গর্ভপাত ,বাচ্চার জন্ম ত্রুটি এবং সিজারিয়ান সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।
আপনি গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন হ্রাস করতে পারবেন না ,তাই একাজটি আগেই করে নিন। সাস্থ্যকর খাবার গুলো গ্রহণের চেষ্ঠাকরুন ।শরীরে পুষিটর অভাব থাকলে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ শুরু করে দিন।(Preparing for Pregnancy diet)
পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামঃ
গর্ভধারণ করার জন্যা পর্যপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের কোন বিকল্প নেই। বর্তমান কর্মজীবী মহিলাই অোমাদের সমাজে বেশী। সংসারের কাজ অফিসের কাজের মাঝে বিশ্রাম নেওয়র ফুসরতিই নেই। জীবন তো চলবেই আপন নিয়মে ,আপনার এখান থেকেই সময় বের করে নিতে হবে। নিজের জন্য না হলেও আপনার অনাগত সন্তানের কথা চিন্তা করে।(How to prepare body for pregnancy)
সুস্থ্য ও সুস্থকর সন্তান পেতে আপনাকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনি পদক্ষেপ নিলে দেখবেন আশপাশের মানুষ ও পরিবেশ আপনার সাহায্যের জন্যা তৈরী হয়ে গেছে।
গর্ভধারণ কোন অসুস্থ্যাতা নয়। আমরা মনে করি গর্ভধারণ করলাম মানে কোন অসুখ হয়ে গেল আমাদের। এভাবে চিন্তা না করে এই সময়টার প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করুন দেখবেন সবকিছু কত সহজ মনে হবে। আপনার মনসিক ও শারিরীক স্বাস্থ্যও ঠিক থাকবে।
প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহন করুন ,অব্যশ্ই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। যেকোন সম্যসায় চিকিৎসকের শরনাপন্ন হোন। বাড়ির মুড়ম্বি দের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন এসব ব্যাপারে ওনারা অনেক অভিঙ্গতা সম্পন্ন।